দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সফলতার সাথে বাংলাদেশের গাজীপুরের টেক্সটাইল মিলের চাকুরী জীবন অতিবাহিত করে অনিশ্চিত জীবনে পা রাখা খুব সম্ভবত রোমাঞ্চপ্রিয় মানুষের কাজ। তাও যদি হয় ওয়েৰ সাইট ডেভলপমেন্ট এর মত সৃজনশীল কাজে নিজেকে সপে দেওয়া হয়। শুধু কি তাই সেটাও যদি হয় প্রতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা ছাড়াই শুধুমাত্র গুগলের উপর ভর করে স্বশিক্ষায় কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে নিজের ভাগ্য বদলের চেষ্টা তাহলে সেটা চমকপ্রদ বলতেই হয়। স্রোতের বিপরীতে চলে জীবন স্রোতকে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসা ব্যাক্তিটি হলেন এম আর জান্নাত স্বপন। আসুন জেনে নেই তার ঝুঁকি বহুল রোমাঞ্চপ্রিয় জীবনের কল্পকথা।
নিতান্ত শখের বশে ২০১০ সালে ইন্টারনেটে সাইট ডেভেলপমন্ট সমন্ধে জানা, সেটি আস্তে আস্তে নেশা হয়ে যাওয়া, পরবর্তীতে নেশা পেশা হয়ে দাঁড়ানো। এই নেশাকে সঙ্গী করে দীর্ঘ ১৭ বছরের টেক্সটাইল মিলের পেশাকে ছেড়ে যাওয়া সেটা বোধহয় স্বাপ্নিক মানুষ ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব না। ‘ ভাগ্য সবসময় সাহসীদের অনুকূলে থাকে ‘ সেটার জ্বলন্ত প্রমাণ হচ্ছে এই স্বাপ্নিক এম আর জান্নাত স্বপন।
তার ফ্রিল্যান্সিং অনিশ্চিত জীবনে সফল হাওয়ার গল্প অনেককে অনুপ্রেরণা দিবে। অনলাইন জগতে ‘মেষ তাডুয়া’ নামে খ্যাত এই স্বাপ্নিক স্বপন প্রকৃত পক্ষে স্রোতের বিপরীতে সফল ব্যাক্তি ,তাই তাকে ‘মেষ তাডুয়া বললেও অত্যুক্তি হবে না।
গত দশ বছরের এম আর জান্নাত স্বপনের অর্জন আপনাকে বিস্মিত করবে। কোন কম্পিউটার না থাকা সত্ত্বেও সাইবার ক্যাফেতে বসে বসে কাজ শেখেন । তিনি আজ অনেক অর্জনের মালিক। শূন্য থেকে শেখরে আসা বোধহয় এটাকেই বলে। নিতান্ত শখের বশে শুরু করা কাজ আজ তার পেশা। আসুন জেনে নেই তার অর্জন।
তিনি বাংলাদেশের নামিদামি অনেক সেলিব্রটিদের ওয়েব পেজ ডিজাইন সহ ৫০০ টির অধিক ওয়েবসাইট ডেভলপ করছেন। বেশ কয়েকজন দেশ সেরা সেলিব্রিটির ফেসবুক পেজও ভেরিভাইড ব্লু বেজ করতে সহায়তা করেছেন। হুর এজেন্সি নামের একটি হোস্টিং , ওয়েব ডিজাইন এবং ডিজিটাল মার্কেটিং কোম্পানির মালিক হয়েছেন। তিনি কানাডা ভিত্তিক বাঙালি চ্যানেল ওয়ার্ল্ড বাংলা চ্যানেল এর হেড অব সোশাল মিডিয়া হিসেবে কর্মরত। কুড়িগ্রাম লাইভ ডট কম নামে একটি অনলাইন পোর্টাল এর সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে কাজ করছেন। এক সময় রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সদস্য হিসেবে কাজ করছেন । মুলত, তার হাত ধরেই রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতি আজকে অনলাইনে পরিচিত।
স্রোতের বিপরীতে চলা নিয়ে এম আর জান্নাত স্বপনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রত্যুত্তরে বলেন ” আমরা মানুষ গণ্ডির বাইরে গিয়ে চিন্তা করতে পারিনা,আমি সেই ছোট থেকে ধারার বাইরে চলতে পছন্দ করতাম। তাই আমি সাহস করে অনলাইন সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়বো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের দেশের তরুণেরা অনলাইন সেক্টরে কাজ করে নিজের ভাগ্য উন্নয়নে অবদান রাখুক, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাক। মনে রাখতে হবে সাহস করে এগুলো সফলতা সুনিশ্চিত যদি একাগ্র পরিশ্রম থাকে।”
ব্যাক্তি এম আর জান্নাত স্বপন আজ শত শত তরুণকে পথ দেখাচ্ছেন, অনলাইনে তরুণদের কর্মক্ষম হতে অনুরোধ করছেন , স্রোতের প্রতিকূলে সফল হয়ে দিন বদলের গান শোনাচ্ছেন তরুণ প্রাণে সেটা সত্যিই অবিস্মরণীয়। এগিয়ে যাক স্রোতের বিপরীতে স্বাপ্নিক স্বপনেরা। এমন স্বপ্নবাজ এম আর জান্নাত স্বপন এগিয়ে গেলেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ, এগিয়ে যাই আমরা।
লিখেছেন: সাইফুল ইসলাম